পনীরটা ভালো হয়েছিল

বাবা সারাদিন খুটখাট করে একখানা প্রেজেন্টেশন তৈরি করলেন। বিকেলে সেটা মিটিংয়ে দেখানো হল। দেখে বস সবার সামনেই উঠে এসে তারিফ জানালেন, কলিগরাও বেরিয়ে এসে পিঠ চাপড়ে দিল। 

বড়ো ছেলে পরীক্ষার জন্য রাত জেগে পড়ল। পরদিন ভাইভাতে প্রায় সব প্রশ্নের উত্তর ঠিকঠাক বললো। স্যার খুব তারিফ করলেন, ভালো নাম্বার দিলেন।
মেজো ছেলে ফেসবুকে একখানা গল্প লিখলো। গল্পটা মোটামুটি হলেও, সবাই খুব ভালো বললো। কয়েকজন পার্সোনাল চ্যাটে এসেও উৎসাহ দিয়ে গেলেন।

মা সারাদিন ধরে, ‘মানসিকভাবে অসাধারণ’ ছোটো ছেলে আর বৃদ্ধ অশক্ত দিদার সাহায্য করলেন। কখনো ছেলের প্যান্ট পালটে দিলেন, কখনো দিদার গায়ে পড়া খাবার মুছে দিলেন।
সন্ধ্যেবেলা ঘেমেনেয়ে সুন্দর করে পনীর তৈরি করলেন— ছেলেরা হোস্টেল থেকে এসেছে যে! রাতে খাবার টেবিলে সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কেমন হয়েছে রে পনীরটা?’
বড়ো ছেলে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করতে ব্যস্ত ছিল, সে শুনতেই পেল না।
মেজো ছেলে গল্পের বই পড়তে পড়তে খাচ্ছিল, কোনোমতে চোখ তুলে তাকিয়ে বললো, ‘উমম্’।
বাবা ঝাঁঝিয়ে উঠলেন, ‘আহ্! খবরটা শুনতে দাও না!’

কেবল ছোট্টো রাহুল মাথা নেড়ে তার শাদা শাদা দাঁতগুলো বের করে অকারণে একগাল হেসে বলে উঠলো, ‘মিমি খুব সুন্দর হয়েছে! তুমি পনীরটা দারুণ করো! আরো খাবো!’

1 thoughts on “পনীরটা ভালো হয়েছিল

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান