সেকেলে প্রেম

জানিস, আমার আর তোর মধ্যে একটা ব্যাপার আছে।
সেই ব্যাপারটার জন্যই,

তোর ওই পিঠছোঁয়া ঘন কালো চুলে বা তোর দুর্গাপুজোর শখে খোঁচা খোঁচা বয়কাটে বিলি কেটে দিতে ভালো লাগে;

…যখন থুথথুরি বুড়ি হয়ে যাবি,তোর পাতলা হয়ে যাওয়া ছাই রঙের চুলের গুছিতেও একইভাবে বিলি কেটে দেবো।

তোর হঠাৎ ইচ্ছেয় তৈরি করা ব্যানানা চকলেট পুডিং খেতে খেতে যেমন চোখে চোখ পড়লে ৩২ পাটি বের করে দি;
…তেমনি বিয়ের পর আলুনি বাঁধাকপির তরকারি খেতে খেতে ‘কেমন হয়েছে’ জিজ্ঞেস করলে হিহি করে হেসে ফেলবো।

তোর ওই টিপটপ বাঁধাচুল কানের দুল শাড়িতে ঝলমলে চোখমুখ দেখলে মনটা হঠাৎই ভালো হয়ে যায়;
…কিন্তু ঘুম থেকে উঠে সকালবেলা বাসিচোখ উস্কোখুস্কো চুল আর লালা লেগে থাকা ঠোঁটের কোণে একটা চুমু না খেলে আমার দিন ভালো যায় না।

সবুজ ঘাসে বসে ছোট্টো একটা কথায় তোর মাথা ঝাঁকিয়ে খিলখিলিয়ে হাসি যেরকম মুগ্ধতা নিয়ে দেখি;
…মেডিকেল কলেজের লেবার রুমে সবুজ কাপড় আর নীল চাদরের মাঝে তোর ঘামে ভেজা মুখ আর অসহ্য যন্ত্রণার চিৎকারেও একইরকম অদ্ভুত মুগ্ধতা খুঁজে পাবো।

একদিন দুজনে একসাথে ঘুরতে ঘুরতে বাজি ধরে রাস্তার মোড়ে ফুচকাকাকুর কাছে ৪৫টা করে ফুচকা খেয়েছিলাম;
…একদিন আমি আর তুই পাশাপাশি বেতের ইজিচেয়ারে বসে ফোকলা দাঁতে দুধ-মুড়ি খাওয়ার কম্পিটিশন করবো।

সেদিন ছোঁয়াছুঁয়ি খেলার সময় হঠাৎই তোর ব্রেসিয়ারের তলায় উন্নত স্তনের স্পর্শ লজ্জাজড়ানো ভালোবাসা ডেকে এনেছিল;
…৪৪ বছর বয়সে মাসিকের কষ্টকর পেটব্যথার দিনে অপটু হাতে বানানো রুটিতে তোকে সেই ভালেবাসাটাই এনে দেব।

আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মুচকি হাসিতে তোর গালের টোলটা চিকমিক করে ওঠে রোদ পড়ে, তখন খুব চুমু খেতে ইচ্ছে করে;
…তোর-আমার গোল্ডেন জুবিলিতে তোকে অবাক করে একখানা লাল ফিতে বাঁধা টেডি বিয়ার নিয়ে ঘর এলে তুই হেসে ফেলবি, তখন তোকে সেই ডিউ থাকা চুমুটা খাবো।

ক্লাসবেঞ্চে পাশাপাশি বসে তোর সঙ্গে এক ইয়ারফোনে হ্যারি বেলাফন্টে শুনতে শুনতে যেভাবে হাতের ওপর হাত রেখে চুপটি করে বসে থাকি;
… রিটায়ারমেন্টের পর ঝমঝম বৃষ্টির সন্ধ্যাবেলা মুখোমুখি বসে “তোমার তখন একুশ বছর বোধহয়” শুনতে শুনতে সেই আঙুলগুলোকেই আঁকড়ে ধরবো বারবার।

উচ্চমাধ্যমিকের সময় যেমন একসাথে তোর সেই পুরোনো বাড়িতে বসে ফিজিক্সের টেস্টপেপার সলভ্ করতাম;
…তেমনি নীলসাদা ইউনিফর্মে সিস্টারদিদি হয়ে যখন নাইট ডিউটিতে যাবি, আমাদের পুঁচকিটার সব প্রবলেম সলভ্ করবো।

মাঝরাতের উন্মাদনাপূর্ণ চরম শরীরী আদরে তোকে পুরুষের পেলবতা উপহার দেবো বড়ো যত্নে;
… আবার শান্ত বয়ে যাওয়া বিকেলে কানে কানে ফিসফিস করে লালনের একতারা পৌঁছে দেব আস্তে আস্তে।

হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজে হঠাৎ ভালোলাগার কথায় তোর ‘অসভ্য একটা’ বলাতে নিজের মনে হাসবো;
… দশ নম্বর অ্যানিভার্সারিতে রুপোলি মোড়কে চেতন ভগতের হাফ গার্লফ্রেন্ড উপহার দিয়ে তোর ‘হারামি’ খিস্তিতে জড়িয়ে ধরে চুমুও খাবো।

তোর গালের নিচে ছোট্টো কালো তিলটার দিকে তাকিয়ে মাঝেমধ্যেই যেমন নিজেকে হারিয়ে ফেলি;
…দস্যি পুঁচকিটার আসার পর কোনো এক বিয়েবাড়ির রাতে শাড়ির ফাঁকে তোর লম্বা স্ট্রেচমার্কেও তোকে সেভাবেই খুঁজে নেবো।

আমার তোর এই ব্যাপারটাকে দুনিয়া প্রেম বলে কি না, আমি জানতে চাইনা।
আমরা এটাকে বন্ধুত্বই বলবো, কেমন? আমাদের সমস্ত অসম্পূর্ণতা, অসহায়তা, অসৌন্দর্য আর অপ্রেমের সারল্য দিয়ে জীবনের ফাঁকফোঁকরগুলো বুজিয়ে দুজনায় মিলে থাকবো।

চল এগিয়ে যাই।

প্ল্যান বিয়ের গপ্পো

প্ল্যান ‘এ’ হচ্ছে বিয়ে-টিয়ে করবো না। কারণ আছে। 

কারণ ১:চরম লেভেলের বিবাগী মনোভাব। ঘর-সংসারের দিকে টানটা এমনিতেই কম। অবরে সবরে ঘর যাই। চেনা পরিচিত মুখগুলোর হাসির থেকে অচেনা মুখের বিস্ময় দেখতেই আগ্রহটা বেশি। তারপর একদিন বাবা আমার নামের মানে বলতে গিয়ে আওড়েছিল—
“মনে ভাবিলাম মোরে ভগবান রাখিবেনা মোহগর্তে,
তাই লিখি দিল বিশ্ব নিখিল দুবিঘার পরিবর্তে।”
সেদিনই একটা ঢ্যারা পড়ে গেছিল। অবস্থাটা ঠিক টেনে রাখা গার্ডারের মতো। পেছনের হাতটার সঙ্গে প্রাণপণে লড়ে যাচ্ছি। কাজেই, বিয়ে-বউ-বাচ্চায় বাঁচা হবে না আমার।
কারণ ২: অদ্ভুত একটা সমাজবিতৃষ্ণা। জানি সবারই থাকে। শালির বাচ্চার জন্মদিনে গিফট কিনতে যেতে সবারই বিরক্ত লাগে, মেসোমশাইয়ের মেয়ের বিয়েতে গিয়ে হেঁহেঁ করতে সবারই ক্লান্ত লাগে—কিন্তু আমার মতো এতোটা জন্ডিস কেস বোধহয় না!
আমার যেকোনো সম্পর্কেই অ্যালার্জি আছে। নতুন কারো সঙ্গে আলাপ/বন্ধুত্ব হলে প্রথম প্রথম ভালো লাগে, তারপর যদি দেখি আমি তার কাছে থেকে কিছুই পাচ্ছিনা, তখন মানে মানে পালাই! অথবা, বাধ্যাবস্থায় সয়ে নি কোনোমতে। মা-বাবা-বন্ধু টাইপের ফেভিকলসম্পর্কগুলোর প্রতিও আমার তেমন আদিখ্যেতা নেই। ওই থাকতে হয়, আছে। ব্যস।
তো এরকম লোকের সঙ্গে খুব বেশি লোকের পটে না, বোঝাই যাচ্ছে! লোকে আড়ালে-আবডালে পাগল বলে, কেউ আবার মুখের ওপরেই বলে দেয়!
আর, দুজন নইলে তো বিয়ে হয় না!

এই তো গেল প্ল্যান ‘এ’। এবার আসি প্ল্যান ‘বি’ এর কথায়—মানে, বিয়ের কথায়। ‘বোহেমিয়ান’ জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে পারি, আত্মবিশ্বাস দিয়ে দুপকেট আর পাছার পকেট ভর্তি করেও হাতে একমুঠো বাকি থাকতে পারে, তা বলে মেগালোম্যানিয়াক তো নই! জানি, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির চাপে, কর্তব্যের দায়ে, কোনো একদিন বিয়ে করতে হতেই পারে। হতেই পারে।
তাই, একটু ছকে রেখেছি আমার ‘আদর্শ বিয়ে’টাকে। ছকে রাখা ভালো। কাজে দেয়।
একে একে আসি।

°আদর্শ পথসঙ্গী°
১. মগজে একটু কড়া উইট, হিউমার আর স্যাটায়ার।
২. অন্যাকা তথা বাস্তববাদী।
৩. সিম্পুল লিভিং, হাই থিঙ্কিং।
৪. এটাই একটু দাবি গোছের। তিনটে জিনিসের মধ্যে যেকোনো দুটোয় চরম লেভেলের আগ্রহ থাকতে হবে।
বই, গান বা দেশবিদেশে সফর।
ব্যাস। ছোটোখাটো ডিটেইলসে যাচ্ছিনা—কেবল বিরক্ত করাই হবে। বেসিক্যালি, এই গুণগুলো আমি সবার মধ্যেই খুঁজে বেড়াই। যাদের মধ্যে পাই, তারাই আমার পেয়ারের লোক হয়ে যায়। কাজেই, এই মানুষটার মধ্যে তো খুঁজবোই!
এবার, আসি অন্যগুলোর কথায়।

°আদর্শ বিয়েস্থান°
অবভিয়াসলি ডেস্টিনেশন ওয়েডিং! আর কিছু না হোক, ওই P.C.Chandraএর অ্যাডটা দেখেছেন? ওরকম হলেও চলবে!
(হেঁহেঁ, নোংরা পুঁজিবাদী চিন্তা। মাঝে মাঝে ইনফিলট্রেট করে যায় আর কী!)

এবারে, মূল পার্ট। মানে, বিবাহ পরবর্তী জীবনের কিছু রুলজ অ্যান্ড রেগুলেশনজ। না না এভাবে বলবো না। লোকে আবার কিসব কিসব বলে বসবে। বরং বলা যাক, কোড অফ এথিক্স। বা বলতে পারেন, আমি বিয়ের পিঁড়িতে বসলে, আমার পাঞ্জাবির কলারের ট্যাগে এগুলোই “*T&C apply” হিসেবে লেখা থাকবে!
যাই হোক, সেগুলো একে একে বলি।

°সাংসারিক সংবিধান°
১. বিয়ের পরের ৬ মাস/১ বছর হচ্ছে ট্রেনিং পিরিয়ড। ওইসময় আমাকে রান্না করাটা শিখিয়ে দিতে হবে। সপ্তাহে সাড়ে তিনদিন রান্নার দায়িত্ব নিতে আমার তরফ থেকে আগ্রহই থাকবে।
২.ঘরের বাকি সব কাজই মোটামুটি পারি। ঘর মোছা, ঝাঁট দেওয়া, জামাকাপড় কাচা, বাসন মাজা এইসব কাজগুলো ভালোই পারি বলে মনে হয়। সেটা মনোমত না হলে এই সময়ের মধ্যে শিখিয়ে নিতে হবে। এইসব কাজকে আমি বাজে কাজ বলে মনে করি না, বরং ভালোইবাসি করতে।
৩. নিজস্ব পছন্দকে গুরুত্ব দিতে হবে। মিউচ্যুয়ালি। একের ওপর অন্যের পছন্দ চাপানো(ইমোশনালি জোর করে হলেও) খুব বাজে জিনিস। সকালে আমি চা ভালোবাসি আর তুমি কফি, সেখানে তুমি বলতেই পারো যে, “তোমার চা আমি বানাব না। নিজে করে খাও।” তাতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। কিন্তু, ‘আমিও খাচ্ছি তুমিও খাও না’ টাইপের আবদার চলবে না।
৪. নানা রকমের ফান্ড এর ব্যবস্থা থাকবে। তা থেকে দুজনেই খরচ দেবে এবং নেবে। এবং মাসের শেষে ক্লিন অডিট দেওয়া হবে। এবং কোনখাতে খরচ বেশি হচ্ছে, কেন হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা হবে।
৫. ছোটো বা বড়, সবাইকে তর্ক করতে জানতে হবে। যুক্তি দিয়ে ঠিকঠাক তর্ক করতে জানতে হবে। আবেগ দিয়ে তর্ক বা কুযুক্তিওয়ালা তর্ক একদমই আনচলেবল্।
৬. ঘরের সব সদস্যকে নিয়ে প্রতি শনিবার রাতে আদালত বসবে। সবার অভিযোগ কোনোরকম পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই শোনা হবে এবং হাতভোট, জুরি সিস্টেম প্রভৃতি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিচার হবে। জরুরি প্রয়োজনে যেকোনো সদস্য জরুরি মিটিং ডাকতে পারে।
৭. যেকোনো ব্যাপারে খোলামেলা কথা বলতে এবং প্রশ্ন করতে জানতে হবে। তা ব্যাপারটা যতই লজ্জার, রাগের বা অস্বস্তির হোক না কেন! যেকোনো প্রশ্ন,পছন্দ-অপছন্দ এবং সমালোচনা মুখের ওপর বলাটাই অ্যাপ্রিশিয়েট করা হবে। এমনকি খিস্তিও।
৮. সেকেন্ড এডিশনগণের আবির্ভাব হলেই জীবনকে বিরিয়ানি থেকে পান্তাভাত করে দিতে হবে, এমন দাবি চলবে না। ৪০ বছর বয়সেও হাত ধরা যায়, ৪০ বছর বয়সেও একসাথে সিনেমা দেখতে যাওয়া যায়, ৪০ বছর বয়সেও চুমু খাওয়া যায়। লোকহাসির ভয় আমি এখনো করিনা, তখনো করবো না।
৯. একাকীত্বের দাবিকে মান্যতা দিতে হবে। আমার মাঝে মাঝে একা হাঁটতে বেরোতে ইচ্ছা হতেই পারে। গভীর রাতে একা টেবিলল্যাম্পে গল্পের বই পড়তেই পারি। একা কোথাও ঘুরতে বা ট্রেক করতেও যেতে পারি। পকেট ধরে ঝুলে পড়া চলবে না।
১০. শেষত, সাংসারিক বৃত্তের যাবতীয় দায়িত্ব, কর্তব্য এবং তাদের ফলাফলের বোঝা দুজনের ওপর সমানভাবে পড়বে। পড়বেই। এবং সেটা এড়ানো যাবে না। এক্ষেত্রে বড়জোর সিমবায়োসিস চলতে পারে, প্যারাসাইটিজম নেভারস্য নেভারম!

পুনশ্চ: ওদিক থেকেও আমি এরকম একটা লিস্টি শুধুমাত্র আশাই করবো না, ইনসিস্টও করবো। না দিলে, তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে।

কমরেড

আচ্ছা, সবাই প্রেম নিয়ে এতো নাচানাচি করে কেন? প্রেম কি মধু সিঙ্গীর গান?

আসলে প্রেম ব্যাপারটা বড়োই একপেশে রে!
সাধারণ মানুষ যে প্রেমটার পেছনে ছোটে, সেটা বড়ই সুপারফিশিয়াল। মানে ওরা ভাবে ওদেরকে ফরেস্ট গাম্পের মত লাগছে, কিন্তু সাইডলাইন থেকে আসলে বাজারের থলি হাতে পাড়ার কিপ্টেকাকু ফটিক ঘোষের মত দেখায়!
সেই ওভাররেটেড প্রেম শুরু হয় নিমেষে, শেষও হয় ক্ষণিকের মধ্যেই! শুরুটা সবাই বুঝতে পারে, সেটা হরমোনজনিত কারণেই হোক বা ফ্রন্টাল কর্টেক্সজনিত কারণে।
কিন্তু সেই প্রেমের শেষটা তাদের চোখে পড়ে না কেন?
কারণ, যদিও সেই প্রেম বিলিতি অফশপের সামনে চাটের দোকানের মতই অ্যাকসেসরি, বা ওষুধের দোকানের সামনে ওজনের যন্ত্রের মতই অ্যাটেনশনখোর; তবু তার মোহে, তার বাহারি চটকে মানুষ চিপকে যায়, চোখদুটো তার গোল্লা গোল্লা হয়ে যায়। ব্যাস, মস্তিষ্ক প্রক্ষালন সমাপ্ত!

আসলে, মানুষ প্রেমিক-প্রেমিকার চিরাচরিত সম্পর্কে যেটুকু প্রেম খুঁজে পায়, সেটুকু শুরুতেই লেগে থাকে।
প্রেম, শুরুতে— ব্যাপারটা গোলমেলে, তাই না?
মানে, যেমন ধরুন, রক্ত পরীক্ষার সময় আঙুল ফোটালে ছুঁচের ডগায় যেমন লেগে থাকে, মাইক্রোবায়োলজির ইনোকুলেশন লুপের ডগায় যেমন ব্যাকটেরিয়ার কলোনি লেগে থাকে, সেরকমই সম্পর্কের শুরুটায় কেবল এক-দু ফোঁটা প্রেম লেগে থাকে। তাও ভেজাল।
কিছুটা হলেও যদি প্রেম থাকে প্রথম আড়চোখে দেখায়, তার ছিঁটেফোঁটাও থাকে না কনফিডেন্ট উড়ন্ত চুমুতে।
কিছুটা হলেও যদি প্রেম থাকে প্রথম কথা বলতে গিয়ে ভয় পেয়ে তোতলানোয়, তার ছিঁটেফোঁটাও পাওয়া যায় না হেসে ফ্লার্ট করায়।
কিছুটা হলেও প্রেম মনে হয় প্রথম পাঠানো ভয়জড়ানো মেসেজকে, তার কণামাত্রও যোগ্য নয় মাঝরাতের দুরন্ত সেক্সটিং।

আসলে, সমাজ বর্ণিত প্রেমের শুরুতেই শুধু মেকি প্রেমের মোড়ক থাকে, বাকিটা শুধুই অভ্যাসের খেলা!

আর, সমাজ যখনই প্রেমের চৌহদ্দি বেঁধে দিতে চায়, তখনই সেটা স্মরণজিৎ এর লেখা রহস্য উপন্যাসের মতো হয়ে যায়। মানে, বড্ডো বেমানান।
হয়না বাপু, হয়না! নলবনে লিপষ্টিক খারাপ করে দেওয়া বা ভিক্টোরিয়ার সবুজ ঘাসে অবাধ্য হাতের বেইমানিকে প্রেম বলতে অস্বস্তি হয় আমার।
আমি প্রেমকে দেখেছি মানুষের গন্ডী ছাড়িয়ে অনেক অনেক বড় হয়ে যেতে। প্রেম দেখেছি হারিয়ে যাওয়াতে, প্রেম দেখেছি মৃত্যুতে। আমি ভালোবাসা দেখেছি পায়ে পা মিলিয়ে দূরে হেঁটে যাওয়ায়।
প্রেমের দৃঢ়তা দেখেছি হাজার মিছিলের হাতগুলো মিলেমিশে যখন ডেভিডের গল্পগুলোই পড়ে আসা বিকেলে সমাজবাদের স্বপ্ন দেখায়। প্রেমের কমনীয়তা দেখেছি কমরেডের চোখে ভেসে থাকা ভরসা আর বিশ্বাসে।

কমরেড, অরিজিৎ সিংয়ের রোম্যান্টিসিজমকে প্রেম বলে ভুল করলে হবে? এখনো অনেক পথ চলা বাকি। চলো,এগিয়ে যাই।